Tuesday, April 2, 2019

হঠাৎ মেঘ ।। জিয়াউর রহমান

গোধূলি লগ্ন ঘনিয়ে এলো প্রকৃতির আকাশ ছুঁয়ে
গুমোট বাতাসে গুড়গুড় মেঘ দিচ্ছে প্রকৃতি ধুঁয়ে।
মাঝে মাঝে দমকা হাওয়ায় শিরশির করে দেহ
তপ্ত বায়ু মেঘ এনেছে জানতে পারেনি কেহ।

হঠাৎ করে ধুলোঝড় এলো সারা আকাশ জুড়ে
জানালা দরজা আছড়ে পড়ে ভাঙে গরীবের কুঁড়ে।
গোধূলির মেঘ সরে গিয়েই বৃষ্টির মেঘ এলো
বজ্রনিনাদে হুংকার এসে প্রকৃতি শাসিয়ে গেল।

একটানা মেঘ বারী দিয়েই শান্ত করলো ধরা
উদাসী সন্ধ্যের মোহনীয় মেম একে দিয়ে গেল খরা!
শান্ত ধরা'য় অশান্ত মন পিছন ফিরে চাই
প্রকৃতির বুকে ভিন্নতার মাঝে শান্তি খুঁজে যাই।

রুদ্ররূপে যে মেঘ আসে বারীও ঢেলে দেয় সেই
একই আকাশ ফুটো হলেও তারা'রা হারায়না খেই।
প্রকৃতির কাছে আদর আছে শাসনেও সে কম নয়
মানুষের কাছে কি আর আছে অহংকারে বুঁদ হয়?

ভাবতে বসে একা লাগে প্রকৃতি চেয়ে দেখি
জীবন ধারণে আমিত্ব নয় মহত্ত্বের কথা লেখি।
সর্বজ্ঞানী মহান যিনি বানিয়েছেন এই ধরা
ফেরার জন্য তৈরী হওয়া আমাদের সবার ত্বরা।
..........................
শেওড়াপাড়া, ঢাকা।
কবি জিয়াউর রহমান 

আমাকে তুচ্ছ করে দাও ।। মাসুদ পারভেজ

আমার জ্ঞান উত্কর্ষতা এতোই বিস্তৃত আমি স্রষ্টাকে খুঁজে পাই না,
হে জ্ঞান আমাকে তুচ্ছ করে দাও ।
-
আমার প্রখর দৃষ্টি অভেদ্য অসুন্দরের পূজার পূজারি করেছে নিজেকে,
হে দৃষ্টি আমাকে তুচ্ছ করে দাও ।
-
আমার প্রযুক্তি সবুজ প্রকৃতি বিনষ্ট করে অট্টালিকার আকাশে ছাদ করেছে,
হে প্রকৃতি আমাকে তুচ্ছ করে দাও ।
-
আমার ক্ষমতা আমাকে আলাদা করে করেছে মানুষ নামের প্রাণী থেকে,
হে সময় আমাকে তুচ্ছ করে দাও ।
-
আমার শিক্ষা মানবতার উল্টো পিটে চড়া ব্যবসার মালিকানা দিয়েছে,
হে শিক্ষা আমাকে তুচ্ছ করে দাও ।
-
আমার আদর্শ ভুল চেতনার উত্তরাধিকারের মশাল দিয়েছে হাতে,
হে পথ আমাকে তুচ্ছ করে দাও ।
-
আমার বিশ্বাস আমাকে মানিয়ে নিয়েছে আমিত্বের সর্বোচ্চ শিখরে,
হে বিশ্বাস আমাকে তুচ্ছ করে দাও ।
-
হে বিবেক আমাকে তুচ্ছ হতে শেখাও প্রতিটি বিমুগ্ধ মুহূর্ত হতে,
হে তুচ্ছ বিবেককে জাগ্রত করে দাও।
কবি ও সংগঠক মাসুদ পারভেজ

নারী ।। খাদিজা বেগম কান্তা

নও তুমি শুধু কামনার ফুল
নও তুমি তৃষ্ণার্ত ভ্রমরের বোল
নও তুমি শিহরিত মানস প্রিয়া
তুমি আজ বিমূর্ত মানবের কূল।

বিজন নিশীথে কাঁদবেনা আর
প্রজ্বলিত হও দহনে দূর্বার
তুমি শক্তি, তুমি শৌর্য তুমি বিমুক্ত অপার
জাগ নারী কম্পিত বজ্র নিনাদ।

নিজ মহিমায় প্রজ্বলিত তুমি
ধর কাণ্ডারি অশ্রু বিদায়ী
নও তুমি সামগ্রী নিঠুর পণ্য
দানবের তরে হও বজ্র কণ্ঠি।

অভিন্ন চারণে হও আগুয়ান
নও তুমি নারী শুধু হও গো মহান
মানবের তরে হও মাতৃ জায়া
বিদুষী, হরষে রাখি সঞ্চিত মায়া।

অদৃশ্য কারাগার শৃঙ্খলিত বেড়ী
গুড়িয়ে দাও নির্ভয়ে জড়তা ছাড়ি
সাম্যের জয়গানে হও গো সামিল
ঘরে বাহিরে হও মহীয়সী নারী।।
কবি খাদিজা বেগম কান্তা

সুখ পাখি ।। সাজিয়া আফরিন

সুখ পাখি তুই এতই উড়িস!
ধার দিবি তোর ডানা দু’টো?
ইচ্ছে মত উড়বো আমি,
ফেরত দেবো দু’দিন পরে।

আকাশ জুড়ে উড়বো আর
বলবো আমি সাত সতেরো
গপ্পো তোদের
সুখ পাখি, দিবি নাকি
তোর ডানা দু’টো?
আয়েশ করে তোকে বসতে দেবো
উষ্ণ নরম আসন দেবো
যা খেতে চাস খেতে দেবো
মিষ্টি মধুর ভরে আমার দু’মুঠো
ধার দিবি তোর ডানা দু’টো?

হরেক মনের খবর এনে দেবো
দে না ভাই তোর ডানা দু’টো!
তোকে আমি স্বপ্ন দেবো,
স্বপ্ন রঙিন পরিসর দেবো
ভালোবাসার কবিতা দেবো
উপমা-অনুপ্রাস উৎপ্রেক্ষা দেবো
তাল, লয়, ছন্দ দেবো, গানও দেবো ।

যা গানের সাথে সুরও দেবো
এবার দে তোর ডানা দু’টো।
কবি সাজিয়া আফরিন
সম্পাদক, আকাশছোঁয়া।