এক মাস সিয়ামের পর খুশির আমেজ নিয়ে আসে ঈদ।
এই ঈদ উদযাপন করার অধিকার সবার আছে। বছরের পর বছর এই সুদূর প্রবাসে পরিবারের সুখের জন্য দিনযাপন করে যাচ্ছে অনেক প্রবাসী। এমন অনেক প্রবাসী আছেন, পরিবারের সাথে ঈদ করছেনা অনেক বছর। ইচ্ছে করছেনা এমন না, জীবনের প্রয়োজনের তাগিদে বাধ্য করেছে ঈদের খুশির দিন গুলোতে প্রিয়জন থেকে দূরে থাকতে। ঈদ বা বিশেষ দিন গুলোতে প্রবাসীরা কত যে কষ্টে দিন গুলো পার করে একমাত্র উপর ওয়ালা জানে। চাঁদরাত পর্যন্ত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পর, ঈদের নামাজ শেষে দু-একজন বন্ধু-বান্ধবের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর ভারাক্রান্ত মন নিয়ে যখন বাসায় এসে ক্লান্ত দেহখানি বিছানায় এলিয়ে দেয়, ঠিক তখনি মনে পড়ে প্রিয়জনদের কথা। ইচ্ছে হয় উঁড়াল দিয়ে চলে যাই কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, চাইলে তো আর যাওয়া যায়না। এই যেতে না পারার পেছনে সফলতার চেয়ে হাজারো ব্যর্থতার গল্প আছে। ভাগ্যে আর জীবনের সাথে সমঝোতা করে, চোখের কোণে লোনাজল গুলো মুছে মোবাইলটা হাতে নিয়ে ফোন করে প্রিয়জনদের। সব ব্যথা লুকিয়ে উৎফুল্ল কণ্ঠে বলে মা, ঈদ মোবারক, ঈদের নামাজ পড়ে আসলাম। মা, তোমরা সবাই সব কিছু নিয়েছো তো? এইবার ঈদে বাড়ীতে কি রান্না হবে, ভাই-বোন-ছেলে-মেয়ে সবাই খুশি হয়েছে কি?
অপরপ্রান্ত থেকে কি জবাব আসে আমাদের সকলের জানা আছে। কষ্টটা আর থাকেনা, আনন্দ বেড়ে যায় সবার খুশির কথা শুনে। বিছনায় এপাশ ওপাশ করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুম থেকে উঠে যাদের বন্ধু-বান্ধব আছে তাদের নিয়ে সন্ধ্যার দিকে লোহিত সাগর প্রান্তে আড্ডায় মেতে উঠে। আবার অনেকে আছে ঈদের দিনেও কর্মস্থলে ফিরে যেতে হয়।
জীবন বাস্তবতায় অনেক প্রবাসীর স্বপ্ন, আশা, চাওয়া-পাওয়া ঘুমিয়ে পড়ে বুকের ভেতর নিরবে, নিভৃতে। স্বপ্ন গুলো কেবল দুচোখে সীমাবদ্ধ, আশা গুলো নিরাশার কাফনে মুড়ানো, চাওয়া গুলো ঠিকানাবিহীন,পাওয়া গুলো সংকীর্ণ।
|
মরুকবি ও সংগঠক জোসনা হক |