Tuesday, May 29, 2018

এলো রে রমজান ।। কাজী বদরুল আলম

মেঘ ভাঙ্গিয়া আকাশ পানে, হাসিয়া উঠিল চাঁদ
জানান দিল রমজান এলো, গুনাহ করিতে কাত।
রহমত, বরকত, নাজাত নিয়ে থাকবে পুরো মাস
শয়তান জেলে বন্দি হয়ে করবে হায় হুতাস।
আত্মসংযমের ধূলায় লুটিয়ে, অহংকার হবে মাটি
ধনীর প্রাসাদ লুটিয়ে পড়িবে গরীব কুঁড়ের পাটি।
ক্ষিধার রাজ্য ভাগাভাগি করে মনকে করবে শুদ্ধ
পুণ্য এবাদত আকাশ ভেদিয়া খোদার আরশে পদ্য।
সিয়াম সাধনার আত্মশুদ্ধি নয় তো শুধু উপোস থাকা
খোঁজ নাও যারা গরীব দুখী, নুন নিতে যার পান্তা ফাঁকা।
 দুহাত পেতে তাদের দুঃখ নাও যদি এই বুক টাতে
খুশি হবেন জাহান বাদশা খুশি হবেন দয়াল তাতে।
জান-মালের যাকাত-ফিতরা দাও যদি গো সঠিকভাবে
সেই সে ধন প্রভু হতে পাহাড়সম বৃদ্ধি পাবে।

নামাজ পড়, রোজা রাখো, কোরান পড় মন ভরে
জিকির করে দোয়া কর, তাজা রাখতে কলব তরে।

মধুর সুরে মিনার হতে মোয়াজ্জিন ডাকবে ভোরে
জেগে ওঠো মুমিন বান্দা আজি সেহেরীর এ ঘোরে।
নতুন চাঁদের খোঁশ আমদেদে বেহেস্ত নামিবে ধরায়
এই সুযোগে মাফ চেয়ে নাও জীবন পূর্ণ ধারায়।
যতই পড়িবে ততই গড়িবে নফল এবাদতে পূর্ণ গিরি
কে থামায় তোর ঈমানপাল্লা পুলসিরাতে বিজলী সিড়ি?
হাজার মাসের শ্রেষ্ঠ এ মাস শবে বরাতের কদর ধরে
তার সে সুফল যে পেল না, চক্ষু ঘাঁ তার অশ্রু ঝরে।

দুহাত তুলে মিনতি করি ওগো রহিম রহমান
সব এবাদত কবুল কর, মাফ কর পাপ পাহাড় সমান।
          সিঙ্গাপুর - 25/05/18
প্রবাসী কবি ও সংগঠক কাজী বদরুল আলম

সৈকতে সেই শোকে ।। লাভলী ইসলাম

বালুকা বেলায় সৈকত সমুদ্রে  দৃষ্টির প্রচন্ড প্রখরতা সেঁচে
খুঁজেছি দূরে কাছে যতদূর দৃষ্টিকে পেরেছি ফেরাতে
যেথায় যেভাবে দাঁড়িয়ে, একদা প্রতিক্ষণ থাকতে
অপেক্ষায় সম্মুখ সৈকতে ।
:
নীল কিংবা ডোরা কাটা সেই শার্ট পরে ।
ব্যর্থ দৃষ্টি বার বার ঝাউবনে লুকোনো অরণ্যের আঁধারে সেই শোকে, সেই শোকে ।
:
বিষাদের নীল সুর এঁটে ফিরিয়ে দিয়েছে সমূলে
নয়নের লোনা জলে অশ্রুধারার স্রোতে
সাগরের নীল জলে ভেসে ওঠে, করুন মূহু মুর্য্য  সুরে
ঢেউয়েরা আঁছড়িয়ে পড়ে হুড়মুড়িয়ে পায়ের পরে সৈকতের তীরে ।
বালির ডিবিরা তলিয়ে নুইয়ে পড়ে
সেই শোকে সেই শোকে ।
:
দৃষ্টিতে ছায়া হয়ে অলকের রুপ ধরে, ফিরে আসে ব্যর্থ সাধে
ক্লান্ত পড়ন্ত বিকেলে সেই সমুদ্র সৈকতে
গাংঙ্গ চিলেরা উড়ে উড়ে খুঁজে ফিরে আসে অবুঝ বেশে  সেই শোকে, সেই শোকে ।
:
নীরব নীলুপ্ত ভাটা নীল ঢেউয়ের গতিময় ক্লান্ত দেহের
অবসাদে
ফুলে ফেঁসে ফেঁপে উঠে, পায়না খুঁজে অতল তলে  ঢেউরা জেগে ওঠে বিষাদে
ঝিনুকের সারি গুলো, হেঁটে হেঁটে কিনারে কিনারে
অনড় হয়ে বসে পড়ে বালির বাঁধে, ঢেউয়ের তোড়ে ফিরে খুঁজে নীল সৈকতের জলে
সেই শোকে, সেই শোকে ।
:
হাঙ্গর তিমি গুলো ডুবুরী হয়ে, নুড়ি তুলে ফিরে আসে না পেয়ে ব্যর্থ রথে ।
সৈকতে নেমে গিয়ে খুঁজবো ভেবে হাঁটু জলে নামি যবে,
কে যেন পেছনে ডাকে তেমনি করে সেই আদুরে গলে ।
অভিমানে অদৃশ্য ঝরনার স্রোতস্বিনীর স্রোতে
বইয়ে যাও একা ফেলে ।
:
আড়ালে সরে গোপনে, বালুকা বেলায় সৈকত সমুদ্রে শুধু একটি বার এসো না ফিরে
কাঁদতে কাঁদতে সাগর উঠেছে ভরে ।
সেই শোকে, সেই শোকে ।
:
ফিরে ফিরে আসি বালুকা বেলায়, সেই সৈকত সমুদ্রে
খুঁজতে অবুঝ শিশুর মতো হয়ে  না বুঝার
ভান করে
সেই শোকে, সেই শোকে ।

কাব্যগ্রন্থ - অনুভূতি ছোঁয়া ভালবাসা 

কবি ও সংগঠক লাভলী ইসলাম

অনন্ত যাত্রা ।। মাসুদ পারভেজ

সেদিন এই চোখে আর সকাল হলো না,
চোখ হাত পা দেহ তোমাকে খুঁজল না।
সংসারে থাকার অধিকার হারিয়ে ফেলায়
শেষ ঠিকানা গোরস্থানের কোন এক কোণায়।
-
শূণ্য বিভীষিকাময় তিমির রাত্রির ঘরে,
ব্যস্ত যাপিত জীবনের সব হিসেব নিয়ে।

তোমাদের আকাশে যখন মেঘ রিমিঝিমি বৃষ্টি ,
আমার চারিপাশে অভিশাপ্ত আগুন আর আগুন;
আমি জ্বলছি আর জ্বলছি;
অসহায়ত্বের চিৎকার তোমাদের কানে পৌঁছেনি;
তোমাদের হাসি থামেনি।
-
তোমাদের কে অবহেলা আর অপূর্ণতার দীর্ঘশ্বাস_
বিষাক্ত সাপের একেকটি ছোবল,
প্রবল আজাবের হাতছানি ।
আমি জানি,আমি কখনোই ক্ষমার যোগ্য নই।
-
তবে তার তরী নেই, যার তীর নেই, কুল নেই।
মুকুলে যার ধরেছে অসুখ, কিসে তার সুখ।
এপার ওপার কেহ নেই তার একটু সুখ সাধ বার।
-
আমি তোমার ছিলাম না, তোমাদেরও না;
নিয়মের ছিলাম না, কখনো নিয়মেও না।
এপার ওপার কেহ নেই, নেই বা কোন মাত্রা,
অনন্ত অভিশাপ নিয়েই আমার অনন্ত যাত্রা।

কবি ও সংগঠক মাসুদ পারভেজ